মহাখালী-গুলশান সড়কের দুই পাশেই যান চলাচল বন্ধ হয়ে গেছে
মহাখালীতে ফের সড়ক অবরোধে তিতুমীরের শিক্ষার্থীরা
- আপলোড সময় : ০৩-০২-২০২৫ ০২:০৯:০৮ অপরাহ্ন
- আপডেট সময় : ০৩-০২-২০২৫ ০২:০৯:০৮ অপরাহ্ন
স্বতন্ত্র বিশ্ববিদ্যালয়ে রূপান্তরসহ সাত দাবিতে আন্দোলনে নামা সরকারি তিতুমীর কলেজের শিক্ষার্থীরা ‘আমরণ অনশন’ এবং দফায় দফায় সড়কে অবস্থান কর্মসূচি চালিয়ে যাচ্ছেন।
তবে বিশ্ব ইজতেমার কথা বিবেচনায় এনে পূর্ব ঘোষিত ‘বারাসাত বেরিকেড টু ঢাকা নর্থ সিটি’ কর্মসূচি শিথিল করে ‘আপাতত’ গতকাল রোববার বেলা ১২টার থেকে মহাখালীতে কলেজের সামনের সড়কে বাঁশ দিয়ে রাস্তা আটকে অবস্থান নিয়েছেন তিতুমীরের শিক্ষার্থীরা।
এতে করে মহাখালী-গুলশান সড়কের দুইপাশেই যান চলাচল বন্ধ হয়ে যায়।
আন্দোলনকারীদের একজন সাদ উল হাসান সিফাত বলেন, তিতুমীর কলেজকে বিশ্ববিদ্যালয়ে রূপ দেওয়ার এ দাবিতে কর্মসূচি চলছে। আমরা জনগণের কাছে অত্যন্ত দুঃখিত, এটার জন্য আমরা সরকারকে দায়ী করব। সরকার এ বিষয়ে আলোকপাত করেনি। ২৮ বছরে আন্দোলন করছি। বর্তমান আন্দোলন তীব্রতর রূপ পেয়েছে। সরকার সেভাবে গুরুত্ব দিচ্ছে না। যার কারণে, আমরা জনগেণের এ দুর্ভোগ হচ্ছে।
তিতুমীর কলেজের চলমান আন্দোলন নিয়ে বিভিন্নভাবে ট্রল করা হচ্ছে মন্তব্য করে করে এ ধরনের কাজ থেকে বিরত থাকার আহ্বান জানিয়েছেন এই শিক্ষার্থী।
আন্দোলন নিয়ে মানুষের কাছে ‘ইতিবাচক সাড়া’ আশা করছেন জানিয়ে সিফাত বলেন, বিনীতভাবে অনুরোধ করছি, আমাদের ইতিহাস জানুন, ক্যাম্পাসের ঐতিহ্য আছে, ঐতিহ্যকে ধারণ করি। অন্যান্য প্রাইভেট পাবলিক ইউনিভার্সিটির মত তিতুমীর কলেজকে আন্তর্জাতিক পযায়ে রিপ্রেজেন্ট করি। তারপর আমাদের নিয়ে কথা বলতে আসুন।
সরকার তাদের দাবি পূরণে ‘বিশেষ নজর’ দেবে বলে প্রত্যাশা করেছেন আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা।
এদিকে কলেজের মূল ফটকে শিক্ষার্থীদের ‘আমারণ অনশন’ কর্মসূচি অব্যাহত রাখা তিনজনের অবস্থা আশঙ্কাজনক বলে জানিয়েছেন চিকিৎসক রাসেল আহমেদ।
সরকারি কর্মচারী হাসপাতালের এই চিকিৎসক বলেন, আজকে সকাল থেকে তিনজন ‘ডিহাইড্রেশনে’ ভুগছে। হাসপাতালে না নিয়ে এদের চিকিৎসা করা সম্ভব হচ্ছে না।
শনিবার রাত ৮টায় ক্যাম্পাসের সামনে ব্রিফিংয়ে আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের প্রতিনিধি মাহামুদুর রহমান মুক্তার বলেন, আমাদের আমরণ অনশন চলছে। শুক্রবার যে কর্মসূচি ঘোষণা করেছিলাম, বারাসাত বেরিকেড টু ঢাকা নর্থ সিটি, তা চলবে যতদিন তিতুমীর বিশ্ববিদ্যালয় রাষ্ট্রীয়ভাবে স্বীকৃতি না পায়।
ইজতেমার জন্য এদিন সকাল ৬টা থেকে ১১টা পর্যন্ত অবরোধ ও আন্দোলন শিথিল রেখে ‘বারাসাত বেরিকেড টু ঢাকা নর্থ সিট’ কর্মসূচির আওতায় মহাখালীতে ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়ক ও রেলপথ অবরোধের কথা ছিল তাদের।
আন্দোলনকারীদের প্ল্যাটফর্ম ‘তিতুমীর ঐক্যর’ সাত দফার মধ্যে রয়েছে, রাষ্ট্রীয় স্বীকৃতি দিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের অ্যাকাডেমিক ক্যালেন্ডার প্রকাশ; ‘বিশ্ববিদ্যালয়’ প্রশাসন গঠন করে ২৪-২৫ সেশনের ভর্তি কার্যক্রম পরিচালনা এবং শতভাগ শিক্ষার্থীর আবাসন ব্যবস্থা কিংবা শতভাগ শিক্ষার্থীর আবাসিক খরচ বহন করা।
এছাড়া ২৪-২৫ শিক্ষাবর্ষ থেকে ন্যূনতম আইন এবং সাংবাদিকতা বিষয় সংযোজন; অ্যাকাডেমিক কার্যক্রম পরিচালনায় যোগ্যতাসম্পন্ন পিএইচডিধারী শিক্ষক নিয়োগ: শিক্ষার গুণগতমান বাড়াতে আসন সংখ্যা সীমিত করা এবং আন্তর্জাতিক মানের গবেষণাগার নির্মাণে জমি ও আর্থিক বরাদ্দ নিশ্চিত করার দাবিও রয়েছে শিক্ষার্থীদের।
এর আগে গত ২৭ জানুয়ারি রাতে তিতুমীর ঐক্যর তরফে বিশ্ববিদ্যালয়ে রূপান্তর এবং বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসনিক কাঠামো গঠনে ৪৮ ঘণ্টা সময় বেঁধে দেওয়া হয়। দাবি মানা না হলে বৃহস্পতিবার থেকে অবরোধের ঘোষণাও দেওয়া হয় তখন।
ওই ঘোষণা অনুযায়ী কলেজের সামনে সড়ক অবরোধ করে বৃহস্পতিবার থেকে দফায় দফায় তাদের কর্মসূচি চলছে। সড়ক অবরোধের কারণে যানজটে ভুগতে হচ্ছে ওই পথ দিয়ে যাওয়া যানবাহন ও যাত্রীদের।
আন্দোলনকারীরা এর আগে ৭ জানুয়ারি শিক্ষালয়টির প্রধান ফটকে ‘তিতুমীর বিশ্ববিদ্যালয়’ লেখা ব্যানার টানিয়ে দেন।
একই দাবিতে গত ১৮ নভেম্বর মহাখালীর আমতলী, কাঁচাবাজার ও রেলক্রসিংয়ে শত শত শিক্ষার্থী জড়ো হয়ে অবরোধ কর্মসূচি পালন করেন। পরদিন ক্লাস-পরীক্ষা বর্জন করে ‘ক্লোজডাউন তিতুমীর’ কর্মসূচি দেন তারা।
এরপর ৩ ডিসেম্বর তিতুমীর কলেজকে বিশ্ববিদ্যালয়ে রূপান্তরের সম্ভাব্যতা যাচাইয়ে পাঁচ সদস্যের একটি কমিটি গঠন করে শিক্ষা মন্ত্রণালয়। তবে ওই কমিটি ‘যথাযথভাবে’ কাজ করছে না বলে অভিযোগ শিক্ষার্থীদের।
নিউজটি আপডেট করেছেন : Dainik Janata
কমেন্ট বক্স
সর্বশেষ সংবাদ